ঢাকার সাভারে নির্যাতনের অভিযোগে বাবাকে হত্যার পর ৯৯৯ এ ফোন করে আত্মসমর্পণ করেছে তরুণী। নিহত আব্দুস সাত্তারের (৫৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুনের অভিযোগে ওই তরুণীকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৯৯৯ থেকে পাঠানো সংবাদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ভোরে সাভার পৌরসভার মজিদপুর কাঁঠালবাগান থেকে এক তরুণী ফোন করে জানান তিনি তার বাবাকে খুন করেছেন, আত্মসমর্পণ করতে চান। খুনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তার বাবা তাকে চার বছর ধরে নির্যাতন করে আসছিলেন।
জানা গেছে, ওই তরুণীর নাম জান্নাতুল জাহান শিফা। ওই তরুণী জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, তিনি তার বাবাকে খুন করেছেন। আত্মসমর্পণ করতে চান এবং দ্রুত পুলিশ পাঠানোর কথা বলেন। খুনের কারণ হিসেবে তিনি দাবি করেন, বাবা তাকে চার বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ২০২২ সালে নাটোরের সিংড়া থানায় বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন তিনি। দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে মুক্ত হন তার বাবা। গত রাতে আবার ধর্ষণ করায় তিনি বাবাকে খুন করেন।
পুলিশ জানায়, সাভার থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ছাড়া খুনের অভিযোগে জান্নাতুল জাহান শিফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, নিহতের নাম আবদুস সাত্তার (৫৫)। তিনি নাটোরের সিংড়া থানার ভগা গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর মেয়েকে নিয়ে সাভারের মজিদপুর কাঁঠালবাগান এলাকায় একটি বাড়ির পঞ্চম তলায় ভাড়া থাকতেন। করতেন অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিফা জানান, তার বাবা তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। যে কারণে বুধবার রাতে খাবারের সময় তার ভাতের সঙ্গে ২০টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। পরে ভোর ৪টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার ও তরুণীকে আটক করা হয়েছে। তরুণীর মা মৃতের তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন। তরুণীর পাঁচ বছর বয়সে তার মা মারা যান। ২০১৯ সাল থেকে বাবা তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেন। ২০২৩ সালে তরুণী বাবার বিরুদ্ধে নাটোর আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলাও করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন বাবা। একপর্যায়ে মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির মামলাও করেন। পরে সাভারে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন আবদুস সাত্তার। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওই বাসায় আসেন তার মেয়ে। এর পর থেকে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকেন তিনি।